চলছে চারুকলার বৈশাখী আয়োজন
মাত্র দিন সাতেক বাকি বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য চৈত্রকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছর বৈশাখকে স্বাগত জানানোর। সময়টা এখন চৈত্রের মাঝামাঝি। আর কদিন পরেই সবার ঘরে ঘরে চলবে বৈশাখী উৎসব। তাই চারদিকে এখনই সাজসাজ রব। আসছে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ, বাংলা নতুন বছর বা পহেলা বৈশাখ।
বৈশাখের প্রথম দিনে বাঙালি মেতে উঠে উৎসবের আমেজে। আর এ বৈশাখকে সাজিয়ে রাঙিয়ে ও জাগ্রত রাখার জন্য দিনরাত আঁকছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতের ছোঁয়ায় পরম যত্মে বানানো বাংলার চিরায়ত লোকজ মটিফ হাতি-সিংহ-বাঘ-ময়ূর আর পাখির নিরবতার মাঝে সরব হয়ে উঠবে পহেলা বৈশাখের আনন্দ-কলরব আর অঢেল হৈইহুল্লরে।
শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির উৎসব, আমাদের ঐতিহ্যের উৎসব। এ উৎসব আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির ধারক। আর পহেলা বৈশাখে চারুকলা থেকে বের হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন দেশের অন্যতম প্রধান আয়োজন। এ আয়োজন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগেই হয়ে থাকে’।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে এবং এ শোভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্যের নানা স্মারক উপস্থাপন করা হবে। আর এ শোভাযাত্রা চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরিশ্রমেই সর্বজনীন রূপ পেয়েছে’।
প্রতিবারের মতো বাঙালির প্রাণের উৎসব পালিত হবে সংস্কার আর সংস্কৃতির মিলনে। বাংলার সবচেয়ে বড় অসাপ্রদায়িক উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ। এই দিনটি বরণ করে নিতে গোটা জাতি সারা দেশে বৈশাখি উৎসবে মেতে উঠে। এক সুরে গাইতে থাকে রবীন্দ্রনাথের ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ বছরের প্রথম দিনকে ঘিরে রাজধানীকে সাজানো হয় বাঙালি সাজে। রাজধানীতে রামনার বটমূলে ছায়ানটে বৈশাখের মূল উৎসব আয়োজন করা হয়।
আর বৈশাখের অন্যতম আয়োজন চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এ শোভাযাত্রায় প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন অয়োজন থাকে। এ আয়োজনের জোর প্রস্তুতী চলছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষবরণের প্রস্তুতিতে বধ্যতামূলকভাবে কাজ করবে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রার সার্বিক তদারকির দায়িত্বে রয়েছে মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরা থাকেন তদারকির দায়িত্বে। বাঙালির ঐতিহ্যের যেসব খেলনা বিলুপ্ত হয়ে গেছে সেসবকে নতুন করে তুলে ধরা, নানা ধরনের কাগজে তৈরি পাখি, মুখশ তৈরি করে বিক্রিও করছেন। আর বিক্রির টাকা দিয়ে আয়োজন করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলার ভেতরে মাঠে চলছে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরির কাজ। বাংলা সংস্কৃতির নানা ধরণের তৈজসপত্রের পাশাপাশি আরও তৈরি করছেন জল রংসহ নানা মাধ্যমের চিত্রকর্ম। বাঙালির সংস্কৃতির তৎপর্য তুলে ধরাই এর লক্ষ্য। এজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের যেন দম ফেলারও সুযোগ নেই।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেআই
=========











